পুরনো গল্পে আর কবিতায়ই ফিরছে নতুন মলাটের পাঠ্যবই–ভুলে ভরা এ পাঠ্যবই দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতির কারণ হবে বলে আশংকা দেশের শিক্ষাবিদদের।
দেশ টিভিকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তুলে ধরেন তাদের মতামত।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক স্তরে পাঠ্যবইয়ে যেসব ভুল সংশোধন করা হয়েছে তা মোটেই যথেষ্ট নয়। সাম্প্রদায়িকতার যে ছোঁয়া পাঠ্যবইয়ে ছিল তার কোনটিই পরিবর্তন-পরিমার্জন করা হয়নি। যা ভবিষ্যতে অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠনে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এদিকে, এসব ভুল-ভ্রান্তি নিয়েই নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে সরকার। রাত পোহালেই শিক্ষার্থীরা পাবে নতুন বই।
প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের বইয়ের পাতায় পাতায় বাক্যগঠন, শব্দ চয়ন ও বানান ভুল নিয়ে শুরু হয় ২০১৭ শিক্ষাবর্ষ। এতে বাংলা সাহিত্যে গল্প-কবিতা পরিবর্তনের নামে প্রতিফলন ঘটে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির। শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন পরিবর্তনে কঠোর সমালোচনার মধ্যে কেটে গেল শিক্ষাবর্ষ শুরুর সাড়ে পাঁচ মাসের মাথায় গিয়ে পাঠ্যবই সংশোধনের উদ্যোগ নেয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি। প্রাথমিক স্তরে পাঁচটি বইয়ের ছয়টি ভুল সংশোধন করে পরবর্তীতে মোট বারোটি বই পরিমার্জনের উদ্যোগ নেয় প্রতিষ্ঠানটি।
শিক্ষাবিদদের পর্যবেক্ষণ- ২০১৭ সালের পাঠ্যবইয়ে যেসব ভুল সংশোধন করা হয়েছে তা যথেষ্ট নয়।
প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে প্রথম শ্রেণির ‘আমার বাংলা বইয়ে কুসুম কুমারী দাশের লেখা ‘আদর্শ ছেলে কবিতা’ একই শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয় বইয়ের লেখিকা বঙ্গবন্ধুর মায়ের নাম সংশোধন, ইংরেজি ভার্সনের হিন্দু ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা বইয়ের পেছনের কভারে শব্দ সংশোধনসহ সমুদ কে সমুদ্র, এই ধরনের ভুলগুলো সংশোধন করা হলেও থেকে যায়, বিজ্ঞান, ইংরেজি, কৃষি বইয়ে অসংখ্য ভুল ও তথ্য-বিভ্রাট।
রাশেদা কে চৌধুরী আশংকা প্রকাশ করেন, এই ভুলগুলো ভবিষ্যত প্রজন্মকে ভুল শিক্ষা দেবে।
গত শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে ভুলের পাশাপাশি প্রগতিশীল লেখকদের লেখা বাদ দেয়া হয় তা এবারও বহাল থেকেছে। শিক্ষাবিদদের আশংকা, গত বছর যে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি পাঠ্যবইয়ে সম্পৃক্ত করা হয়েছে তা ভবিষ্যত সমাজ গঠনে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
২০১৮ সালকে নির্বাচনী বছর উল্লেখ করে দুজনেই বলেন, নির্বাচনী কোনও প্রভাব যেন শিক্ষাখাতকে বিচলিত না করে সেদিকে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে খেয়াল রাখতে হবে।