টানা কয়েক দফা বন্যা ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৫ লাখ হেক্টর ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিমাণ জমি থেকে যে ফসল পাওয়া যেত তা টাকার অংকে দেড় হাজার কোটি টাকা বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কৃষি অধিদপ্তর।
এদিকে, যে পরিমাণ রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার মূল্য প্রায় তিনশো কোটি টাকা। ক্ষতির তালিকায় ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবাদী পশু তো রয়েছেই। আর যে অর্ধকোটি মানুষ এবারের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকার আগামী তিন মাস সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল জানান, হতদরিদ্রদের এই সহায়তা দিতে এরই মধ্যে পর্যাপ্ত অর্থও বরাদ্দ পাওয়া গেছে।
সরকারি হিসাবে আগস্টের বন্যা ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে দেশের প্রায় ৩৫টি জেলা ভয়াবহ প্লাবিত হয়েছে। এতে দেড়শো মানুষের প্রাণহানি ঘটলেও ক্ষতির শিকার হয়েছেন প্রায় অর্ধকোটি মানুষ। প্রায় ৫ লাখ হেক্টর কৃষি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে ওইসব অঞ্চলে অতিরিক্ত পানির কারণে আউশ উৎপাদন যেমন ব্যহত হয়েছে তেমনি আমন আবাদের উপযোগীও নেই।
তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী কৃষকদের ঘুরে দাঁড়াতে আগামী নভেম্বর পর্যন্ত তিন মাস সহায়তা দেবে সরকার।
বিনামূল্যে সার, বীজ এমনকি নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব এম শাহ্ কামাল।
অন্যদিকে মানুষের জান-মালের পাশাপাশি ঘরবাড়ি, পশু-পাখি এবং ওইসব অঞ্চলের সড়ক ব্যবস্থারও বেশ ক্ষতি হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্র জানা গেছে, তিন হাজার মিটার সড়ক পুরোপুরি ওয়াশআউট হয়ে গেছে। ৬৭ দশমিক ৩১ কিলোমিটার সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। যা ধীরে ধীরে পানি সরতে শুরু করলেও ৪টি পয়েন্ট একেবারে পানিতে ডুবে রয়েছে।
এতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ প্রায় তিনশো কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শফিকুল ইসলাম জানান, ঈদ সামনে রেখে সাময়িকভাবে এসব সড়ক মেরামত করা হলেও ঈদের পরে পুরোপুরি সংস্কার করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
এদিকে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হতদরিদ্রদের সরকার মাসে ত্রিশ কেজি চাল, নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ত্রাণ সচিব।
একই সঙ্গে বসবাসের অযোগ্য যাদের ঘরবাড়ি তাদেরকে আশ্রয়কেন্দ্রে রেখে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।