অনুমোদনহীন নার্সারি, প্রিপারেটরি ও কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো বন্ধ করতে যাচ্ছে সরকার। একই সঙ্গে অনুমোদিত স্কুলগুলোর পাঠ্যক্রম ও কার্যক্রমও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্সকে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা— আর বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা বন্ধের পাশাপাশি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মান উন্নয়নের তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন বিধিমালায় নার্সারি, কিন্ডারগার্টেন এবং প্রিপারেটরি স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে হলে সরকারের অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একই সঙ্গে জাতীয় পাঠ্যক্রমের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারিকুলাম ঠিক করার কথাও বলা আছে বিধিতে। আর বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস বা জায়গা কমপক্ষে নিজস্ব ৮ শতাংশ জমিতে হতে হবে। ৫০০ শিশুর উপযোগী বই সংবলিত গ্রন্থাগার থাকারও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু রাজধানীতে প্রতিষ্ঠিত অধিকাংশ কিন্ডারগার্টেন কিংবা নার্সারি বিদ্যালয়গুলো সরকারের এ নিয়ম-নীতির বাইরে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাবে নিবন্ধিত এধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র সাতশো। আর নিবন্ধনের বাইরে সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে ২৫ হাজার। বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা কয়েক লাখ। শহরের পাড়া-মহল্লা এমনকি বাসা-বাড়িতেও চলছে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানের ফি একেক রকম আবার পাঠ্যক্রমও আলাদা আলাদা। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মন্ত্রণালয়ের নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি গঠিত এ সংক্রান্ত টাস্কফোর্সকে ১ মাসের সময় বেধে দিয়ে প্রতিবেদন চেয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান।
এদিকে, সরকারের এমন সিদ্ধান্তে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা।
তারা বলেন, সরকারি বিদ্যালয়গুলো পাঠদানের উপযোগিতা হারিয়েছে তাই তাদের একমাত্র ভরসা এখন এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আর বিশ্লেষক অধ্যাপক শফি আহমেদ বলেন, দেশের শিক্ষাব্যবস্থা একই পদ্ধতিতে হওয়া উচিৎ।
তবে নিবন্ধনহীন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পাশাপাশি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও সক্রিয় করতে হবে— একই সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাকেও সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার তাগিদ দেন তিনি।