আসন্য বাজেট থেকেই বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে নতুন মূল্য সংযোজন কর-মূসক আইন। এ আইন বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুৎ বিল থেকে শুরু করে সব কিছুতেই ভোক্তাদের আগের চেয়ে বেশি ব্যয় করতে হবে।
এর ফলে সাধারণ মানুষের ওপর চাপ বাড়বে এবং বাড়বে মূল্যস্ফীতিও।
দেশ টিভিকে একান্ত সাক্ষাতকারে অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দীন তাদের মতামত তুলে ধরেন।
তবে রাজস্ব আহরণে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ওপর থেকে মূসকের হার কমিয়ে প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়ালে এ চাপ অনেকটাই লাঘব হবে বলে তারা মনে করছেন।
আগামী বাজেটে অর্থায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরকে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হচ্ছে প্রায় ২ লাখ চার হাজার কোটি টাকা। এনবিআর এ রাজস্ব আহরণে সবচেয়ে বেশি গুরত্ব দিচ্ছে পরোক্ষ কর বা ভ্যাটের ওপর। এ খাত খেকে তাদের আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হতে পারে সর্বোচ্চ ৭৪ হাজার কোটি টাকা।
এনবিএরে ভ্যাট আদায় করবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। আর ব্যবসায়ীরা তা আদায় করবেন ভোক্তাদের কাছ থেকে। নতুন আইন অনুযায়ী সব খাতেই গড়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আদায় করা হবে। প্রায় ২ হাজার পণ্যের ওপর থেকে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধাও উঠে যাচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের হিসেবে এর ফলে বিভিন্ন সেবা ও পণ্য কিনতে ভোক্তাদের ব্যয় করতে হবে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ। তাদের হিসেবে ২ হাজার টাকার কোনো পোশাকে ব্যয় বাড়বে ২০০ টাকা প্রতি ভরি স্বর্ণে দাম বাড়বে ৪০০০ টাকা।
অর্থনীতিবিদ ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘এ পরিস্থিতিত যদি ভ্যাটের চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে, আর এটা যদি বাস্তবায়ন করা যদি সম্ভব হয় তাহলে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। তার কারণ হচ্ছে যে সমস্ত প্রতিষ্ঠান ভ্যাট দিচ্ছে না তারা যদি ভ্যাট দেয় তাহলে তারা পণ্যে দাম অবশ্যেই বাড়াবে।’
ব্যবসায়ীদের এ হিসেবের সঙ্গে একমত না হলেও ভোক্তাদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।
তবে এ চাপ লাঘবের কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ১৫ শতাংশের জায়গায় ৫ শতাংশ মূসক করার পরামর্শ তার। এর আয়করসহ বিভিন্ন খাতে করের আওতা বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আয় করের আওতায় যারা আছেন সেটার নম্বরটা অনেক বেশি বাড়ানো যাবে। উচ্চবিত্তদের বেশি মাত্রায় করের আওতায় আনতে পারেন তাহলে রেট বাড়ানো দরকার পড়বে না এবং সম্ভবত নিচে যারা আছেন নিম্ন আয়ের যারা আছেন তাদের কিছু রেওয়াত দেয়া যাবে।’
প্রত্যক্ষ করের আওতা বাড়িয়ে কর ব্যবস্থাপনার আরও উন্নতি করতে পারলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সহজ হবে বলে তিনি মনে করছেন।