গত তিন দশকের বেশি সময় ধরে রাজধানীর প্রায় দুই হাজারেরও বেশি পুকুর, ঝিল ও খালের অস্তিত্ত্ব হারিয়ে গেছে। এগুলোর প্রায় সবই অবৈধ দখল দারদের কবলে।
ঢাকা জেলা প্রশাসক মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া দেশ টিভিকে বলেন, মাঝে মধ্যেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
তবে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর তদারকির অভাবে আবার তা অবৈধ দখলদারদের দখলে পরিণত হয় বলে জানান তিনি।
সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের কাছে সে সবের কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই। একের পর এক ভরাট আর দখলের কারণে দিনদিনই এগুলো হারিয়ে গেছে।
কর্মকর্তাদের অবহেলা ও সমন্বয়হীনতার কারণে সম্পদের কোনো হিসাবই নেই ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের এসব পুকুর খালের। সীমিত কিছু সম্পদের হিসাব থাকলেও এর মধ্যে রয়েছে বহু গড়মিল। এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ ঝিল ও পুকুরের সম্পত্তি বেদখলের পাশাপাশি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে দিনদিনই।
বিগত ২০১১ সালের শুরুর দিকে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলের পুকুর ও ঝিলের মোট পরিমাণ ছিল ৫১৪২ বিঘা।
এর মধ্যে অঞ্চল-১ এর ১ হাজার ২২ বিঘা, ৩ এর ২৭০ বিঘা, ৪ এর ১ হাজার ৪২ বিঘা, ৫ এর ১৭৪ বিঘা, ৬ এর ৫০৭ বিঘা, ৭এর ৪৬২ বিঘা, ৮ এর ৫৫৩ বিঘা, ৯ এর ৬৫৮ বিঘা ও অঞ্চল ১০ এর ১৭৫ বিঘা পুকুর ও ১৭৫ বিঘা ঝিল ছিলে।
এর মধ্যে অঞ্চল ২ এ নবাববাড়ি পুকুর, নয়াবাজার হাজি আবদুর রশীদ লেনের বংশাল পুকুর ও আলু বাজারের সিক্কাটুলীতে একটি করে পুকুর ছিলে। অঞ্চল ৫ এ পুকুর ছিল ১৮টি। ৩ এ ছিল ২১টি এবং অঞ্চল ৬ এ ছিল ২০টি।
দুই সিটি করপোরেশন বিভক্ত হওয়ার পর এসব পুকুর ও ঝিলের কোনো তথ্য নেই তাদের কাছে। তবে মাত্র ৫টি পুকুরের তথ্য রয়েছে দুই সিটি করপোরেশনের কাছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মহানগর নাট্যমঞ্চ পুকুর, গুলিস্তান পুকুর, ওসমানী উদ্যান পুকুর ও ধোলাইখাল পুকুর। আর উত্তর সিটি করপোরেশনের উত্তরার ট্যাংকপাড়া পুকুর।
মৎস অধিদপ্তরের এক জড়িপ থেকে জানা যায়, ১৯৮৪ ও ৮৫ সালে ঢাকার পুকুরের সংখ্যা ছিল দুই হাজার। ১৯৮৮ ও ৮৯ সালের দিকে তা কমে ১ হাজার ২০০ নেমে আসে। আর ২০০৯ সালে তা নেমে আসে ২০০ নিচে। এসব পুকুরের অধিকাংশ সিটি করপোরেশনের হলেও রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকি না থাকায় অধিকাংশ পুকুর বেদখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে ধোলাইখাল পুকুর পাড়ে গড়ে উঠেছে মাকের্ট ও ট্রাক স্ট্যান্ড।