শিশুদের কল্যাণ ও অধিকার রক্ষাতে প্রথমবারের মত বাজেটে আনা হচ্ছে বিশেষ বরাদ্দ ও নির্দেশনা। শিশু অধিকার কর্মীরা এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও সরকারের ভেতর থেকে এ ব্যাপারে দ্বিমতও পোষণ করছেন কেউ কেউ।
তাদের মতে একটি অংশকে প্রাধান্য দিয়ে আলাদা বাজেট করলে ভবিষ্যতে সমাজের অন্যান্য শ্রেণীর জন্যও আলাদা বাজেটের দাবি উঠতে পারে।
রনি নামের এ পথ শিশুটির যখন স্কুলে যাওয়ার কথা তখন সমবয়সীদের স্কুল ভ্যান ঠেলে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে তাকে। দেশে রনির মতো অনগ্রসর শিশুর সংখ্যা নেহাত কম নয়। শিশু অধিকার কর্মীরা বহুদিন ধরেই শিশুদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে শিশুদের জন্য বাজেট প্রণয়ণের দাবি করে আসছেন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও বলেন, ১৫-১৬ অর্থবছরেই আলাদা করে প্রণয়ন করা হচ্ছে শিশু বাজেট।
তবে শিশু বাজেট প্রণয়ন জটিলতা আরো বাড়াবে বলে মনে করছে উন্নয়ন পরিকল্পনা বিভাগ।
তাদের মতে, জনগোষ্ঠীর শুধু একটি অংশের জন্য পৃথক বাজেট করলে ভবিষ্যতে অন্যান্য শ্রেণী থেকেও একই দাবি তোলা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘সামজের সব মানুষকে একসঙ্গে করে একটা বাজেট হয়। ভিন্ন ভিন্ন খাত তৈরি করে বাজেট করতে হবে বলে আমি মনে করি না।’
পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচির ড. সামসুল আলম বলেন, ‘পুরো সমাজটিকে সামনে রেখে বাজেট করা হয়। শিশুদের চাহিদা মেটানোর জন্য যা করার বা প্রয়োজন মেটানোর, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বা তাদের মানসিক উন্নয়নের জন্য যা প্রয়োজন হয় তা করা হয়। কাজেই ভিন্ন ভিন্ন বাজেট করেই যে সফলতা অর্জন করা যায় তা বলা যায় না।’
আর শিশু অধিকারকর্মীরা বলছেন, শিশু বাজেট আলাদা কোনো বাজেট নয়। বাজেটে সরকার শিশুদের জন্য কতো বরাদ্দ রাখছে এবং কতো ব্যয় হচ্ছে তা নিরুপণ করাই শিশু বাজেটের মূল উদ্দেশ্য। দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ৩৯.৭ % অর্থাৎ ৬ কোটি ৪০ লাখ শিশু।
সেভ দ্যা চিলড্রেন সিআরজির উপপরিচালক শামসুল আলম বলেন, ‘এটা কখনোই আলাদা বাজেট নয়–বাজেটের মধ্যে এমন একটা ম্যাকানিজম তৈরি করা হোক শিশুদের ইস্যুতে কোন মন্ত্রণালয় কি কাজ করবে, কত টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে, তা কিভাবে খরচ করা হচ্ছে, সেই খরচের ফলে শিশুদের জীবনে কি পরিবর্তন আসল এ ৩টা জিনিসকে আমরা বাজেটে রাখতে বলা হয়েছে।’