ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকসহ প্রায় ২০টি চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার কথা রয়েছে। যদিও বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তির সুরাহা এ সফরে হচ্ছে না। এরইমধ্যে স্ব স্ব দেশের মন্ত্রিসভায় বেশগুলো চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য অনুমোদিত হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এসব চুক্তি দুই দেশের বাণিজ্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিশাল সুযোগ তৈরি করবে। দেশের স্বার্থ আদায়ে সরকারকে এসব সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
এদিকে, ভারতে বিজেপি সরকার গঠনের পরপরই দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে আমন্ত্রণেই আগামী ৬ জুন ঢাকায় আসছেন নরেন্দ্র মোদি। তার এই সফরকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা অমীমাংসিত বিষয়গুলো সমাধানের আশা দেখছে বাংলাদেশ।
ধারণা করা হচ্ছে, ২০টিরও বেশি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা। এরইমধ্যে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি, নৌ প্রটোকল চুক্তি, বাস চলাচলে প্রটোকল চুক্তি দুই দেশের মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থার মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষরসহ বেশকিছু চুক্তির খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রাসভা।
স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নে প্রটোকল স্বাক্ষর, নৌ ও সড়ক পথে ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষরসহ প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঋণ দেবে ভারত।
এছাড়াও ত্রিপুরার পালাটানা থেকে আসবে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ, খুলনা-কোলকাতা-খুলনা ট্রেন সার্ভিস চালু, উপকূলীয় জাহাজ চলাচল চুক্তি, ভিসা প্রথা সহজীকরণ ও ই-ভিসা চালু, ভারত দেবে ৫০০ বাস ও ট্রাক এবং বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর নবায়ন করারও কথা রয়েছে।
এ সকল চুক্তিতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে লাভ-লোকসানের হিসেবে বাংলাদেশের লোকসানের বিষয়টিই বার বার আলোচনা-সমালোচনায় উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের স্বার্থ অনেক। ভারতের স্বার্থে যেসব চুক্তি হবে সেখানে বাংলাদেশের স্বার্থও আদায় করতে হবে। তবে সেক্ষেত্রে সরকারকে আরো কৌশলী হতে হবে। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও বাড়াতে হবে।
দুই দেশের মধ্যে ট্রানজিট ট্রান্সশিপমেন্টের বাইরেও উৎপাদনমুখী বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সেক্ষেত্রে চীন-বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যের আদান-প্রদান বাড়ানোর ওপরও জোর দেন তারা।
তবে বহু প্রতিক্ষিত তিস্তার পানি বন্টন চুক্তি এ সফরে না হলেও এ সমস্যা সমাধানের পথ তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।