বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলের ডাকা অবরোধ-হরতালে পেট্রোল বোমা ছুড়ে সাধারণ মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বিএনপি-জামাতের কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে ও পরিকল্পনায়। এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে রাজধানীর যাত্রাবাড়িতে বাসে পেট্রোলবোমা ছোড়ার ঘটনায় জড়িত দুই অভিযুক্তের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে।
এজন্য মোটা অংকের টাকা বরাদ্দের কথা থাকলেও মাত্র চার হাজার টাকার বিনিময়ে এ হামলার ঘটনা ঘটে। বিএনপির কয়েকজন নেতা এই পরিকল্পনা করেন বসুন্ধরায় একটি বাড়িতে বসে। মহানগর হাকিমের আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে ঘটনার সঙ্গে যুক্ত শহিদুল ও পারভেজ এসব তথ্য জানায়।
যাত্রাবাড়িতে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোলবোমা হামলার নেপথ্যের পরিকল্পনার কুশীলবদের কথা বলছিলেন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়া অভিযুক্ত শহীদুল।
শহীদুল বলেন, ‘ঘটনার ২ দিন আগে জনি ভাই আমাকে ফোন দিয়েছে, জনি ভাই বিএনপির নেতা, আমাদের এলাকার নেতা, বসুন্ধরার বাসা বাড়িতে আমাদের নিয়ে যায়। সেখানে যাওয়ার পর টুকু, সোহেল, জনি ভাই অনেক নেতারা বসা ছিল। পরে নবী ভাই আমাকে বললো তোমার নাম কি? আমি বললাম আমার নাম শহীদুল্লা, গাড়ি চালাই—বলল ঠিক আছে। তিনি বলেন, আমার একটা বড় ধরনের কাজ করে দিতে হবে।’
একই সঙ্গে সে জানায় কিভাবে এবং কারা সেদিন বোমা ছুড়েছিলো দুই দফায় মাত্র চার হাজার টাকার বিনিময়ে।
শহীদুল আরো বলেন, ‘পারভেজ নামে একটা পোলা আছে,ওর কাছে কিছু লোক আছে –বলে ওরে ডেকে নিয়ে আয়, পারভেজও আসল যাত্রাবাড়িতে, পরে জনি ভাই আসল, আসার পরে ২ হাজার টাকা দিল সেভেনআপের বোতলে করে ২ লিটার পেট্রোল দিল। তুই ওদের দিয়ে দে। ঘটনা যেদিন হবে ওইদিন জনি ভাই আমাকে নিয়ে গেছেন যেখানে কাজটা হবে, জায়গাটা দেখালো, তারপর বললো তোরা যদি কাজটা করিস, তাহলে তোরা এই জায়গা দিয়ে বের হয়ে যেতে পারবি। ৩ জনের হাতে ৩টি পেট্রোলবোমা দিল। ওরা সোজা হেঁটে গেল আর আমি ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে আছি, যাত্রাবাড়ির ডেমরার দিকে একটি গাড়ি গেছে, যাত্রী বাস ভরা, ওই বাসের মধ্যে ছুড়ে মারে ওরা।’
যাত্রাবাড়িতে গত ২৪ জানুয়ারি রাতে বাসে পেট্রোলবোমা ছোড়ার ঘটনায় ৩২ জন দগ্ধ হন। এরমধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাশিদুল নামে একজন মারা যান।
শহিদুল ও পারভেজের স্বীকারোক্তি তথ্য যাচাই বাছাই করছে-জানিয়েছেন ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আদালতে উপস্থাপন করবো সে রকম সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যার নাম বের হয়ে আসুক না কেন তার যে সামাজিক বা দলীয় মর্যাদা বা পরিচিতি এটি আসলে গুরুত্ব দেয়ার সুযোগ নেই, আইনগতভাবেও সুযোগ নেই।’
এই বোমা হামলার ঘটনায় পুলিশ খালেদা জিয়াকে হুকুমের আসামি এবং স্থানীয় আরো ৫০ জন বিএনপি নেতাকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করে।