দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয় বিএনপি-জামাত জোট। কর্মসূচি দেয় যেকোনো মূল্যে নির্বাচন ঠেকানোর। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে শুরু করে ব্যাপক সহিংসতা। চলে ভাঙচুড়, অগ্নিসংযোগ আর নির্বাচনে অংশ গ্রহণকারীদের ওপর হামলা। আর এ সবের মধ্যদিয়ে বিএনপি-জামাতের মূল টার্গেটে পরিণত হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি পুলিশ, আনসার কেউই।
৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঠেকাতে ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে সহিংস হয়ে ওঠে নির্বাচন বিরোধীরা। আর এই সহিংসতায় দেশব্যাপী টার্গেট করা হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীকে। এরমধ্যে রাজশাহীতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন পুলিশ সদস্যরা।
রাজশাহীতে ২৬ ডিসেম্বর পুলিশের গাড়িতে বোমা মেরে হত্যা করা হয় পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থকে। এর আগে পুলিশের উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীরকে হেলমেট দিয়ে পিটিয়ে জখম করে জামাত-শিবির। বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া হয় শিক্ষানবিশ পুলিশ কর্মকর্তা মকবুলের হাত।
২০১৩ সালে বিএনপি-জামাতের এসব সহিংসতার ঘটনায় রাজশাহীতে ৪৬ টি মামলা হয়েছে। এগুলোর বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অভিযোগপত্রও জমা দিয়েছে পুলিশ।
৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন দায়িত্বপালন করতে গিয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে নির্বাচন বিরোধীদের হামলায় নিহত হন আনসার সদস্য আব্দুল ওয়াহেদ। ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেয়ার সময় বাধা দিলে নির্বাচন বিরোধীরা তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার চার্জশিট দেয়া হলেও আসামিরা এখনো গ্রেপ্তার হয় নি বলে অভিযোগ নিহতের পরিবারের। আব্দুল ওয়াহেদের মৃত্যুর পর তার পরিবারকে সরকারি চাকরি, নির্বাচন কমিশন, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৫ লাখ টাকা ও খাস জমি দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসক আহমদ শামীম আল রাজী বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৮ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে আব্দুল ওয়াহেদের পরিবারকে। তবে জমি বরাদ্দ দেয়ার ক্ষেত্রে কোনো অগ্রগতি নেই।
এছাড়া, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগে ও পরে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নির্বাচন বিরোধীদের হামলায় আহত ও নিহত হন বেশ কিছু আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য।