দশম জাতীয় নির্বাচনের আগে-পড়ে ও ভোটের সময় চট্টগ্রাম, ফেনী, গাইবান্ধা, রাজশাহী, নীলফামারী, কুমিল্লা ও লক্ষ্মীপুরের অনেক জায়গায় ভোটকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের চেষ্টা করে নির্বাচনবিরোধীরা। ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত স্কুল-কলেজে আগুনও দেয় তারা। পুড়ে যায় নতুন বই-আসবাব পত্র। এসব ঘটনায় দায়ের মামলার অগ্রগতি হয়নি এক বছরেও। আর বেশিরভাগ আসামিই বেরিয়ে এসেছেন জামিনে।
দশম জাতীয় নির্বাচনের দুএকদিন আগে থেকেই নির্বাচনবিরোধীরা দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভোটকেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে টার্গেট করে নাশকতা শুরু করে। তাদের দেয়া আগুনে নির্বাচনী সরঞ্জামসহ পুড়ে ছাই হয়ে যায় শিক্ষার্থীদের জন্য রাখা নতুন বই আর স্কুলের আসবাবপত্রও। এরই ধারাবাহিকতায় ভোটের দিনও দেশজুড়ে ভোটকেন্দ্রে নাশকতা চালানো হয়।
রাজশাহীর চারঘাটে ৫ জানুয়ারি নির্বাচন ঘিরে যে সহিংসতা হয় তার বেশিরভাই হয় এখানে। নির্বাচনের আগের দিন কালাবিপাড়া ঊচ্চ বিদ্যালয়, সরদহ ঊচ্চবিদ্যালয়, সরদহ পাইলট ঊচ্চবিদ্যালয়, শলুয়া ডিগ্রি কলেজসহ ভোটকেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয় নির্বাচনবিরোধীরা। এসব ঘটনায় ১৮টি মামলা হয়। এরমধ্যে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে মাত্র ১৫টি মামলার।
নির্বাচনী সহিংসতায় গাইবান্ধার ২৭টি বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বেশ কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার হলেও পরে তাদের বেশিরভাগই জামিনে বেরিয়ে আসেন। আর অভিযোগপত্র দেয়া হলেও অধিকাংশ মামলার কোনো অগ্রগতি হয়নি।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার ৫টি ভোটকেন্দ্রে হামলার ঘটনায় ৪টি মামলা করা হয়। কয়েকজন আসামি গ্রেপ্তার হলেও তাদের বেশিরভাগই জামিনে বেরিয়ে আসেন। এসব মামলায় এখনো অভিযোগপত্র দিতে পারেনি পুলিশ।
কুমিল্লার তিন উপজেলায় নির্বাচন চলাকালীন ও আগের রাতে দুর্বৃত্তদের দেয়া আগুনে পুড়ে যায় ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বই।
এসব ঘটনায় মনোহরগঞ্জে ২৯টি মামলা হয়। এগুলোর মধ্যে ১৯টি এখনো তদন্তনাধীন। আর ১৪১ জন গ্রেপ্তার হলেও বেশিরভাগই জামিনে রয়েছেন। নির্বাচনবিরোধীদের আগুনে ফেনীরও ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নতুন বই পুড়ে যায়।
নির্বাচনবিরোধীদের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় নীলফামারী, নরসিংদী ও লক্ষ্মীপুরের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও। এসব ঘটনায় দায়ের মামলায় এখনো কোন অগ্রগতি নেই।