দশম জাতীয় নির্বাচনের আগে ও পরে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি, জামাত-শিবিরের সহিংস ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় ৭০৪টি মামলা হলেও গত একবছরেও ৫৬৭টি মামলার তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশ। আর অভিযোগপত্র দিয়েছে মাত্র ১৩৭টি মামলার। দেশ টিভি এ ক্ষেত্রে পর্যালোচনা করেছে।
পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য মতে, নির্বাচনকালীন সহিংসতায় খুনের মামলা হয়েছে ১৪টি। এসব মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি ৪৩৬ জন। এছাড়াও নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় সারাদেশে দায়ের করা মামলার আসামি ৬৩ হাজারের বেশি।
গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে নির্বাচনের আগে ও পরে দেশব্যাপী বিএনপি ও জামাত-শিবিরের সহিংসতায় প্রাণ হারান অনেক সাধারণ মানুষ। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সংঘর্ষ, ট্রেনে আগুন, রেললাইনের ফিশ প্লেট উপড়ে ফেলা, থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা, পুলিশ সদস্যদের হত্যা ও আগ্নেয়াস্ত্র লুটের ঘটনাও ঘটেছে। বিশেষ করে রাজধানীতে যানবাহনে আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষকে হত্যার ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে ঠেলে দেয় নগরবাসীকে।
ভোট কেন্দ্রে হামলার নামে দেশের ১১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেয়া ও ভাঙচুর করা হয়। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত নিহত হন ১৪২ জন, সহিংসতায় প্রাণ হারান ১৮ পুলিশ সদস্য। ৬ ৯৭ টি ভোটকেন্দ্র ভাঙচুর ও ১০০ কেন্দ্রে হামলা ও ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ১৪টি স্থানে হিন্দুদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় দায়ের করা হয় ১৮টি মামলা। সহিংসতার ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ৬৩টি মামলা হয় যশোরে।
এছাড়া গাইবান্ধায় ১৫৯টি, রাজধানীতে ৪২, রাজশাহীতে ৪৬, দিনাজপুরে ৪৬, চাঁদপুরে ৪১, নীলফামারী ২৫, লক্ষীপুরে ৩১ ও ঠাকুরগাঁওয়ে ২০টি মামলা হয়। আর এসব ঘটনায় সারাদেশে সব মিলিয়ে মামলার সংখ্যা ৭০৪টি। এসব মামলায় আসামি করা হয় ৬৩ হাজারের বেশি মানুষকে তবে বেশির ভাগ মামলারই আসামি অজ্ঞাতনামা।
গত একবছরেও ৫৬৭ মামলার তদন্ত শেষ করতে পারেনি পুলিশ আর অভিযোগপত্র দিয়েছে মাত্র ১৩৭টি মামলার।
একটি গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে আসে এসব ঘটনায় মামলা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জেলায় ব্যাপক ধর-পাকড় চালায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আটক হওয়া আসামিরা ছাড়া পেয়ে আবারো হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, মামলাগুলোর এমন ধীরগতি নিয়ে গতবছরের ২১ জুলাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠকে দ্রুত তদন্ত করার সিদ্ধান্ত হলেও কার্যত তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি।