মেগা চুরির কারণে বিদ্যুতের লোডশেডিং হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার যখন বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর কাজ শুরু করেছিল, তখন বলেছিল প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি সক্ষমতা অর্জন করেছে। কিন্তু আজকে লোডশেডিং কেন? কারণ হচ্ছে দুর্নীতি, চুরি, মেগা চুরি।
শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি। বিদ্যুতের লোডশেডিং ও অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি বিক্ষোভ সমাবেশটির আয়োজন করে।
সমাবেশে বিদ্যুতের পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, দেশে এই যে কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্টগুলো আছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও তাদেরকে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে টাকা দিতে হবে। সেই ক্যাপাসিটি চার্জের নামে বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে তাদের নিজস্ব ব্যবসায়ীদের টাকা দিয়েছে। সামিট গ্রুপ কাদের আপনারা জানেন? আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ফারুক খানের বড় ভাই আজিজ খান। তাকে ৯ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা দিয়েছে। এগ্রিকো ইন্টারন্যাশনাল ৬ হাজার ৯৭০ কোটি টাকা, এরদা পাওয়ার হোল্ডিং ৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা, ইউনাইটেড গ্রুপ ৪ হাজার ৮৮১ কোটি টাকা, কেপিসিএল ৩ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা, বাংলা ক্যাট ৩ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকা, ওরিয়ন গ্রুপ ৩ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা নিয়েছে। এরকম ১০টা কোম্পানি হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছে। যা আপনাদের পকেটের টাকা।
তিনি বলেন, গ্যাস উত্তোলনের জন্য আপনি, আমি সারচার্জ দেই। সেই ফান্ড থেকে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা গ্যাস কেনার জন্য দিচ্ছে। এটা আরেকটা ডাকাতি। একদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের নাম করে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। অন্যদিকে এলএনজি, এলপিজি আমদানি করছে সব আওয়ামী লীগের ব্যবসায়ীরা।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ বিদ্যুৎ, গ্যাস পাচ্ছে না। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। রাজনীতি ও বিচার বিভাগকে ধ্বংসের পর এবার অর্থনীতিকে শেষ করছে। সরকার উন্নয়নের মিথ তুলে ধরে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে।
এ সময় মিরসরাইয়ে ট্রেন-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় নিহতদের কথা স্মরণ করে সরকারের ব্যর্থতাকেই এর জন্য দায়ী করেন। তিনি বলেন, সড়ক ব্যবস্থাকে নৈরাজ্যের মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে। মিরসরাইয়ে দুর্ঘটনায় ১১ শিক্ষার্থী নিহতসহ এমন অসংখ্য নজির প্রতিদিন দেখা যাচ্ছে।
সরকার পতনের জন্য এক দফা আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ সরকারের কারণে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। পতন না হলে মানুষের কষ্ট কমবে না।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সঞ্চালনায় সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-যুব সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, মহানগর দক্ষিণের নেতা ইশরাক হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।