সাভারের আশুলিয়ায় শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা এবং নড়াইলে এক শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোকে অসভ্যতা ও জাতীয় লজ্জা বলেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, ‘ষাটের দশকে এসব ঘটনা চিন্তাও করা যেত না। এখন দিনদুপুরে কিশোর, তরুণেরা দা, লাঠি, রামদা, টেঁটা, বন্দুক হাতে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটি চরম অসভ্যতা, অভব্যতা ও লজ্জার। এসব ঘটনা আমাদের মাথা হেট করে দেয়।’
শুক্রবার ( ১ জুলাই) রাজধানীর এফডিসিতে আয়োজিত বাজেট নিয়ে এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। ‘এবারের বাজেট টেকসই উন্নয়নে সহায়ক’ শিরোনামে ছায়া সংসদে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
গত ২৫ জুন সাভারের আশুলিয়ায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল আহসান জিতু ক্রিকেট খেলার স্টাম্প দিয়ে কলেজ শাখার শিক্ষক উৎপল কুমারের মাথায় আঘাত করে। এ ঘটনার এক দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শিক্ষক উৎপল কুমার। পরে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী জিতুকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। অন্যদিকে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন নড়াইল সদর উপজেলায় মির্জাপুর ইউনাইটেড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে স্থানীয় প্রশাসনের সামনেই জুতার মালা পরিয়ে দেন স্থানীয় লোকজন। এ দুটি ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এম এ মান্নান বলেন, ‘বিভিন্ন সামাজিক সূচকে ভারত ও পাকিস্তানকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ। কিন্তু শিক্ষককে এভাবে হত্যা করা কিংবা হেনস্তা পাকিস্তান ও ভারতে হয় না। যেটা আমাদের দেশে হচ্ছে। এসব নিয়ে আলোচনা করা দরকার। কেন এসব ঘটছে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতার মারাত্মক ঘাটতি আছে। এসব শিখতে হবে।’
এবারের ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘নীতিশাস্ত্র ও আইন দুটো ভিন্ন বিষয়। পাচার করা অর্থ দেশে ফেরত আনার সুযোগ নৈতিকভাবে ঠিক নয়। কিন্তু আইনগতভাবে বাধা দেওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, সরকার আইনগতভাবেই এটি করেছে। তবে আমার মত হচ্ছে, টাকা ফেরত আনার সুযোগ দিলেও এটা কাজে দেবে না। যারা টাকা চুরি করে কানাডা, সুইজারল্যান্ডে নিয়ে গেছে, তারা সেই টাকা নিয়ে আসবে না। চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনি। হয়তো সামান্য আসতে পারে। যেমন কেউ ১০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। তিনি এক হাজার কোটি টাকা নিয়ে এলেন। কিন্তু ৯ হাজার কোটি টাকার খবর থাকবে না। আমরা ওই এক হাজার কোটি টাকা নিয়েই কথা বলব।’