রমজান মাসে আগুণ জ্বলছিল নিত্যপণ্যের বাজারে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ থাকার পরও বিভিন্ন চক্রের কারসাজিতে একেক করে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যায়। ঈদুল ফিতরের পর আবার দফায় দফায় দাম বাড়ছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের। ঈদুল ফিতরের পর ৫ মে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে এক লাফে ৩৮ থেকে ৪৪ টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকার অজুহাতে বাড়ানো হয় পেঁয়াজের দাম। একদিনের ব্যবধানে শুক্রবার(১৩ মে) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে রসুনের দর দ্বিগুণ বাড়ানো হয়েছে।
রাজধানীর শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা গৃহিনী সাবিহা ইসলাম বলেন, সয়াবিন তেল গত দুই দিন ধরে স্থানীয় বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। রসুনের দামও দ্বিগুণ। পেঁয়াজের দামও বেড়েছে। কিছু সবজির দাম শুধু একটু কমেছে। এভাবে দাম বাড়লে আমরা কিভাবে চলবো?
শুধু সাবিহা নন, তার মতো হাজারো ক্রেতা এমন প্রশ্ন করছেন। যদিও ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কারন তুলে ধরছেন দাম বাড়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে গেছে। ফলে আমদানি করা অধিকাংশ ভোগ্যপণ্যের দাম আরো বেড়ে যেতে পারে। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ভারত থেকে আমদানি বন্ধ থাকায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিবিড় নজরদারি ও অভিযানের অভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে একদিনের ব্যবধানেই রসুনের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। পাশাপাশি সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের বাড়তি দাম তো আছেই। ক্রেতারা বলছেন, রসুনের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মালিবাগ বাজারসহ কয়েকটি বাজারে দেশি রসুন বিক্রি হয় প্রতি কেজি ১০০ টাকা পর্যন্ত। অথচ একদিন আগে প্রতি কেজি রসুনের দাম ছিল ৪০-৫০ টাকা। আমদানি করা রসুনের কেজি আগে ছিল ১০০ থেকে ১২০ টাকা। তা কেজিতে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। ব্যবসয়ীরা বলছেন, পাইকারি বাজারে বিক্রির জন্য রসুন তারা কিনছেন ৮২ টাকা দরে। অথচ একদিন আগে তারা আরো কম টাকায় কিনেছেন রসুন। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে দেশি রসুনের সরবরাহ কমেছে।
ঈদুল ফিতরের আগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকায়। কিন্তু সপ্তাহের শুরুতে পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা।
মহাখালি, খিলক্ষেত, মালিবাগসহ আশপাশের বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মোটা দানার মসুর ডাল কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে- বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। সরু দানার মসুর ডাল কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়। চিনির দাম কেজিতে দুই টাকা বেড়ে ৮২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে। খোলা ময়দায় দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়েছে। বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। রাজধানীর খিলক্ষেত বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজারে বেশি দামে এসব খাদ্যপণ্য কিনতে গিয়ে ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে, মোড়কজাত গুঁড়া দুধের দাম কোম্পানিভেদে কেজিতে ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।