বেশ কয়েকদিন ধরে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছিরেন চা শ্রমিকেরা। পরে ২১ আগস্ট রাতে জেলা প্রশাসন, শ্রমদপ্তরের প্রতিনিধি, শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক বৈঠকে ১২০ টাকা মজুরি রেখেই কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রস্তাব মেনে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন ইউনিয়নের নেতারা। তবে শ্রমিকদের একটি অংশ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকেই কর্মবিরতি পালন করছিলেন শ্রমিকেরা। দুপুরের দিকে শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া চা-বাগানসহ বেশ কয়েকটি বাগানে গিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক নাহিদ আহসান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলী রাজীব মাহমুদ। এসময় তারা প্রধানমন্ত্রীর বার্তা চা-শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দেন এবং কাজে ফেরার অনুরোধ জানান।
জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে গত সোমবার সিদ্ধান্ত হওয়ায় পরও কী কারণে শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিচ্ছেন না, এ নিয়ে তাঁরা মতবিনিময় করেন। তাঁরা উপজেলার ভাড়াউড়া, জেরিন, কালীঘাট, ফুলছড়া চা-বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। জেলা প্রশাসকের কথায় আশ্বস্ত হয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন জেরিন ও ভাড়াউড়া চা-বাগানের শ্রমিকেরা। বাকিরা এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
কালীঘাট চা-বাগানের বাগান পঞ্চায়েত সভাপতি অভান তাঁতী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা এত দিন ধরে আন্দোলন করছি। হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়া আমরা কাজে যোগ দেব না। এখন যদি ৩০০ টাকা ঘোষণা দেওয়া হয়, আমরা এখন কাজে যাব। আমাদের শ্রমিকেরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’
জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘আমরা রোববার রাতে শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে কথা বলে একটা সুন্দর সমাধান করেছিলাম। শ্রমিকেরা প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কয়েক দিনের ভেতরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শ্রমিকেরা চা-বাগানকে ভালোবেসে কাজে ফিরুক। তাঁদের সব দাবি বিবেচনা করে মানা হবে। আজ সকাল থেকে জেলার অনেক চা-বাগানে কাজ শুরু হয়েছে। শ্রীমঙ্গলেও চা-শ্রমিকেরা কাজ করতে চাচ্ছেন, কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারী তাঁদের যেতে বাধা দিচ্ছে। শ্রমিকদের উসকাচ্ছে। আমরা সাধারণ শ্রমিকদের কাজে যেতে অনুরোধ করছি, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।’