পরপর দুই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় নাটোর শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শনিবারের পর শুক্রবার রাতেও সন্ত্রাসী হামলায় দুই যুবলীগ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছে। এই ঘটনায় নাটোরের রাজনীতিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতারা অভিযোগ করেছেন, যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়েছে আওয়ামী লীগেরই কর্মীরা।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাতে সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয় দুই যুবলীগ কর্মী। আহত আবুল হোসেন ও লিটন আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতের এই ঘটনার পর শনিবার সকাল থেকেই নাটোর শহরে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাত আটটার দিকে নাটোর সদর উপজেলার একডালা বাবুর পুকুরপাড় এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে একই ধরনের হামলায় দুই যুবলীগ কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পর শহরে বড় রাজনৈতিক সহিংসতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সদর থানা–পুলিশ সূত্র জানায়, গতকাল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় নাটোর স্টেশনবাজার এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একডালা এলাকায় নিজ নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন যুবলীগ কর্মী আবুল হোসেন (৩৬) (ইউপি সদস্য) ও লিটন আলী (৩২)। রাত আটটার দিকে তাঁরা বাবুর পুকুরপাড় এলাকায় পৌঁছালে সন্ত্রাসীরা তাঁদের এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।
রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের প্রথমে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। হাসপাতালের ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে তাঁরা চিকিৎসাধীন। হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য রবিউল ইসলাম জানান, তাঁদের দুজনের শরীরে অনেক কাটা জখম আছে। তবে লিটন আলীর অবস্থা বেশি সংকটাপূর্ণ।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাটোর রেলগেট এলাকায় সন্ত্রাসীরা যুবলীগ কর্মী এস এম মাসুদ পারভেজ (৪৭) ও বুলবুল হোসেনকে (৪০) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেন। তাঁরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা চেয়ারম্যান–সমর্থক ও সংসদ সদস্যের সমর্থকেরা শহরে পৃথক পৃথক প্রতিবাদ মিছিল করেন।
নাটোর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাছিম আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ক্ষমতাসীন ব্যক্তিদের মধ্যে দুটি পক্ষ এসব ঘটনার জন্য একে অন্যকে দায়ী করছে। পুলিশ তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে কঠোর ব্যবস্থা নিবে।