সিটি প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জনকে অপহরণ ও হত্যার প্রতিবাদে স্বতস্ফুর্তভাবে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করছে নারায়ণগঞ্জের মানুষ। হরতালে বিএনপি, সিপিবি, বাসদ, ন্যাপ, গণসংহতি আন্দোলন, সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন সমর্থন দিয়েছে।
আমাদের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, অপহরণ ও হত্যার প্রতিবাদে জেলা আইনজীবী সমিতির হরতালে সকাল থেকে খোলা হয়নি শহরের কোনো দোকানপাট ও অফিস-আদালত। হরতালের কারণে নারায়ণগঞ্জ শহরে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক আছে। সহিংসতা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার খন্দকার মহিদ উদ্দিন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শহরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, বিজিবি, পুলিশ ও র্যা পিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব) মোতায়েন করা হয়েছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জের সর্বস্তরের মানুষ এ হরতালকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দিয়েছে। সকল রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী সংগঠন, সাংস্কৃতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সবাই সমর্থন দিয়েছে।’
এদিকে, সকালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় পৌঁছালে তা আটকে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এ সময় বন্ধ রয়েছে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ট্রেন চলাচল।
নারায়ণগঞ্জ চাষারা ট্রেন ষ্টেশন মাস্টার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘হরতাল সমর্থনকারীরা আমার কাছে আসে এবং বলে যে কোনো গাড়ি যেনো না চলে। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমি কর্তৃপক্ষে জানাই। পরে কর্তৃপক্ষে জানায় যে, গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখেন। ফলে সকাল থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে।’
এদিকে, প্যানেল মেয়র নজরুলসহ ৭ জনের হত্যার বিচারের দাবিতে রোববার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি শুরু করছেন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালত থেকে লিংক রোড ধরে ঢাকায় যাওয়ার পথে অপহূত হন সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম এবং তার ৪ জন সহযোগী। প্রায় একই সময়ে একই সড়ক থেকে গাড়িচালকসহ অপহৃত হন আইনজীবী চন্দন সরকার।
তিন দিন পর বুধবার শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ৬ জনের এবং পরদিন আরেকজনের লাশ পাওয়া যায়।