বিশিষ্ট কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন আর নেই। সোমবার (২৫ নভেম্বর) দিনগত মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন । ভাষা ও সাহিত্যে অবদান রাখায় ২০১৮ সালে একুশে পদক পান কৃতি কবি, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষক ও স্থপতি রবিউল হুসাইন।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ভোরের কাগজকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রবিউল হুসাইনের শরীরে দীর্ঘদিন ধরেই রক্ত তৈরি হচ্ছিল না। এ কারণে তিনি বিএসএমএমইউতে ভর্তি হয়েছিলেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়।
রবিউল হুসাইনের জন্ম ১৯৪৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ঝিনাইদহের শৈলকুপার রতিডাঙ্গা গ্রামে। কুষ্টিয়া শহরে স্কুল ও কলেজ জীবন শেষে বুয়েট থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
স্থপতি হওয়ার পাশাপাশি ষাটের দশক থেকেই তিনি লেখালেখির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখা ছাড়াও ষাটের দশকে বিভিন্ন ছোট কাগজে লেখালেখি করতেন। কবিতা, প্রবন্ধ, উপন্যাস ও শিশুতোষ গোটা পঁচিশেক বইয়ের লেখক তিনি।
রবিউল হুসাইন বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউট, জাতীয় কবিতা পরিষদ, কেন্দ্রীয় কচি কাঁচার মেলা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, বঙ্গবন্ধু জাদুঘর, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচকসহ বিভিন্ন সংস্থায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন।
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ২০১৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন। এছাড়াও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার, কবিতালাপ সাহিত্য পুরস্কার, আইএবি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিপত্নীক ছিলেন। তার একমাত্র সন্তান রবিন হুসাইন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিস্তৃত সবুজ পটভূমিকায় রক্তাভ যে শহীদ মিনার সেটি আমাদের জাতীয় পতাকা তথা বাংলাদেশের মর্মমূলেরই প্রতীকীরূপ। ওই স্থাপত্যকর্মটির নকশা করেছেন স্থপতি রবিউল হুসাইন। তার করা এমন অসংখ্য দৃষ্টিনন্দন নকশা এই ঢাকা শহরে ছড়িয়ে রয়েছে।