একাত্তর সালের ১৬ ডিসেম্বর রেসকোর্স ময়দানে জেনারেল নিয়াজীর আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে দেশ শত্রুমুক্ত হলেও টেলিভিশন-বেতার আয়ত্বে নিতে আরো একদিন সময় লেগে যায়।
বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নেতৃত্বে ১৭ ডিসেম্বর তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশন-পিটিভি শত্রুমুক্ত করে প্রতিষ্ঠা করা হয় বাংলাদেশ টেলিভিশন। আর সেসময় যেকজন মুক্তিযোদ্ধা এর নেপথ্যে ছিলেন তাদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দীন ইউসুফ একজন।
তার কাছ থেকে শোনা যাক সেদিনের বিজয় উল্লাসের কথা।
বিজয় উল্লাসে বাধভাঙ্গা জোয়ারের মত গোটা রাস্তায় তখন মানুষের ঢল। তাদের এক আওয়াজ..’জয় বাংলা’। সবার মুখে বিজয়ের হাসি আর চোখে আনন্দের অশ্রু। চারদিক থেকে ছুটে আসছে জনস্রোত। গন্তব্য ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান। যেখান থেকে নয় মাস আগে জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব উদ্দীপ্ত কণ্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন মুক্তির জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার কথা।
আর এদিকে, তখন মুক্তিযোদ্ধা ক্রাক প্লাটুন টেলিভিশনের দখল করে। পাকিস্তান টেলিভিশন পরিণত হয় বাংলাদেশ টেলিভিশনে।
সাবেক বিচিত্রার সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা শাহদত চৌধুরী, নাসির উদ্দীন ইউসুফসহ অনেকেই ছিলেন সেই ক্র্যাক প্লাটুনে।
১৯ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে যে টেলপ ভেসে উঠেছিল তার ছবি তুলেছিলেন মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল ইসলাম স্বপন।
সেদিনের সে স্মৃতির কথা জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ।
কিন্তু সে বিজয়ের বার্তা সারাদেশে তখন সে খবর সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে মুক্তিযোদ্ধারা ছুটে যান রামপুরার ডিআইটি রোডের তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশন-পিটিভিতে।
সেই মাসটিও ছিল ডিসেম্বর। ১৯৬৪ সালের ২৫ নভেম্বর ঢাকার তৎকালীন ডিআইটি ভবনে শুরু হয়েছিল পাকিস্তান টেলিভিশনের সাদাকালো সম্প্রচার। যাত্রার ছয় বছরে সাংস্কৃতিক চর্চার বিকাশ না ঘটলেও একাত্তরেই শুরু করে পাকিস্তান টেলিভিশন।