বাংলাদেশের তরুণ-যুবারা দুর্গমগিরি এভারেষ্ট জয়ের মাধ্যমে সমবয়সীদের মাঝে সক্ষমতাকে জাগিয়ে তোলার উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছেন—এ কথা বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের করফারেন্স লাউঞ্জে বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং এন্ড ট্র্যাকিং ক্লাব (বিএমটিসি) এর উদ্যোগে হিমালয়ের ‘কেয়াজো-রি শিখর’ অভিযান ও দুগলা-গিরিপথে ফেরার সময় ‘সজল খালেদ স্মৃতিফলক’ স্থাপন পরিকল্পনা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এভারেষ্ট বিজয়ীদের এই সাফল্যে দেশের আপামর তরুণ - যুবকদের মাঝে এই বোধোদয় হয়েছে- আমরাও পারি। তাই এখন একের পর এক দল পর্বতারোহণে যাচ্ছেন, এমনকি বাংলাদেশের নারীরাও এভারেষ্ট শৃঙ্গ জয় করেছেন।
ড. খান বলেন, একাত্তরে জনগণের মাঝে বঙ্গবন্ধু ’আমরাও যে পারি’এই বোধ সঞ্চার করতে সমর্থ হন । এজন্যই আমরা আধুনিক অস্ত্র সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীকে বুকের রক্ত ঢেলে পরাজিত করেছি। দেশকে স্বাধীন করতে সমর্থ হয়েছি।
তিনি দেশের পর্বতারোহী দলগুলোকে রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে পৃষ্ঠপোষকতা করা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন।
অ্যান্টার্কটিকা ও সুমেরু অভিযাত্রী ইনাম আল হক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দু’দুবারের এভারেস্ট জয়ী এম এ মুহিতের নেতৃত্বে দেশের প্রথম নারী এভারেস্ট জয়ী নিশাত মজুমদারসহ ৬ জন অভিযাত্রী এই পর্বতারোহণ অভিযানে অংশগ্রহণ করবেন। এদুজন ব্যতীত অন্য অভিযাত্রীদেরও মাউন্টেনিয়ারিং এর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং মাউন্টেনিয়ারিংয়ের বাস্তব অভিজ্ঞতা রয়েছে।
অন্য অভিযাত্রীরা হচ্ছেন- সাদিয়া সুলতানা, কাজি বাহলুল মজনু, মো. মহিউদ্দিন ও শামীম তালুকদার।
এম এ মুহিত জানান বিএমটিসির ব্যবস্থাপনায় এবং পর্বতারোহীদের নিজস্ব উদ্যোগে তাদের এই পর্বতারোহণ পর্ব শুরু হলেও বর্তমানে এই অভিযানের স্পন্সর -স্কয়ার টয়লেট্রিজ লি.এবং বার্জার পেইন্ট্স বাংলাদেশ লি.। দলটি এ বছর ১০ অক্টোবর নেপালের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করে ২০ দিনের অভিযানে হিমালয়ের ’কেয়াজো-রি’ শিখরে (২০,২৯৫ ফুট) আরোহণ করবে এবং প্রত্যাবর্তনের পথে দুগলা-গিরিপথে (১৫,৭০০ ফুট) সজল খালেদ স্মৃতিফলক স্থাপন করবে। সেখানে এপিটাফ হিসেবে সজল খালেদের সন্মানে জাতীয় পতাকা স্থাপন করা হবে।
এভারেস্টজয়ী সজল খালেদ ২০ মে ২০১৩ তারিখে গিরিশৃঙ্গ থেকে ফেরার পথে হিমালয়েই মৃত্যুবরণ করেন।
এম এ মুহিত বলেন, ’দুগলা-গিরিপথে এভারেষ্ট অভিযানে নিহত বাবু চিরি শেরপা, পাসাং লামু শেরপা, স্কট ফিশার ও অন্যান্য প্রখ্যাত পর্বতারোহীর স্মৃতিফলক রয়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পর্বতারোহীদের উৎসাহিত করেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী এবং বিশিষ্ট স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের হেড অব মার্কেটিং মালিক মোহাম্মদ সাঈদ, বার্জার পেইন্ট্স এর হেড অব মার্কেটিং এ.কে.এম. সাদেক নেওয়াজ প্রমুখ ।
অতিথিরা সজল খালেদ স্মৃতি ফলকে জাতীয় পতাকা স্থাপনের জন্য পর্বতারোহী দলটির দলনেতা এম এ মুহিতের হাতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
সকলে সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় পর্বতারোহী দলটির সাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা জানান। সূত্র বাসস।