মগ ও পর্তুগীজ জলদস্যুদের কবল থেকে নদী বেষ্টিত নগরীকে সুরক্ষিত রাখতে মোঘল আমলে ইছামতী নদীর তীরে মুন্সিগঞ্জে নির্মাণ করা হয়েছিল ইদ্রাকপুর দুর্গ। এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে মোঘল স্থাপত্য শৈলীর অন্যতম এ নিদর্শন। সম্প্রতি দুর্গের সংস্কার কাজ করে আঞ্চলিক সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র ও জাদুঘর স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়।
প্রাচীন ঢাকাকে জলদস্যুর কবল থেকে রক্ষার জন্য সুবেদার মীর জুমলা ১৬৬০ সালে মুন্সিগঞ্জে ইদ্রাকপুর দুর্গ নির্মাণ করেন। ইট দিয়ে নির্মিত চার কোণা দুর্গটি উত্তর-দক্ষিণে প্রসারিত। দুর্গের মূল স্থাপনাটি গোলাকার। দুর্গটির গায়ে কামান ও বন্দুকের গুলি চালানোর উপযোগী ফোকর রয়েছে। রয়েছে ভূগর্ভস্থ একটি কুঠুরি এবং সেখানে যাওয়ার সিঁড়ি।
জনশ্রুতি আছে, সিঁড়িটি ছিল একটি গোপন সুড়ুঙ্গপথের অংশ যা দিয়ে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে পারতো দুর্গে অবস্থানকারীরা। আর কক্ষটি অস্ত্রশালা, যেখানে অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ মজুদ থাকতো।
মুন্সীগঞ্জের সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট. শাহীন মোহাম্মদ আমানউল্লাহের মতে এ দুর্গকে ঘিরেই গড়ে ওঠে মুন্সিগঞ্জের সভ্যতা।
প্রথম ধাপে প্রাচীরের সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। জাদুঘর স্থাপনের কাজও শেষ পর্যায়ে। এছাড়া, দুর্গের ভেতরে আঞ্চলিক সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র গড়ে তোলার সুপারিশ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
দুর্গ সংস্কারের পাশাপাশি এর ইতিহাস বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে উদ্যোগ নিলে পর্যটকদের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।