কৃষ্ণসাগরে ঝাঁকে ঝাঁকে ভেসে উঠেছে মৃত ডলফিন। এ নিয়ে রাশিয়া-ইউক্রেন পাল্টা-পাল্টা অভিযোগ তুলেছে। মৃত্যুর দায় এড়াতে এক দেশ আরেক দেশকে দুষছে। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, রুশ-ইউক্রেন নৌবাহিনীর সংঘাতে সমুদ্রের পানিতে ধারাবাহিক বিস্ফোরণ ও দূষণের কারণেই তারা মারা যাচ্ছে। কিন্তু ডলফিনের গণমৃত্যুর কারণ হিসেবে সামনে আসছে ষড়যন্ত্র গন্ধ। কৃষ্ণসাগরে রুশ নৌঘাঁটির উপর দোষ চাপাতে ইউক্রেন বাহিনী পরিকল্পিত ভাবে ডলফিনগুলোকে হত্যা করে থাকতে পারে বলে প্রশ্ন উঠেছে।
এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে ইউক্রেন সেনার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কৃষ্ণসাগরে মোতায়েন রুশ রণতরী মস্কোভার সলিল সমাধি ঘটেছিল। তারপরেই ক্রাইমিয়ার সেভাস্তিপোলসহ কৃষ্ণসাগরের কয়েকটি রুশ নৌঘাঁটির নিরাপত্তায় বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডলফিন বাহিনী নিয়োগ করেছিল মস্কো। গত দু’সপ্তাহে সেখানকার উপকূলবর্তী এলাকায় শতাধিক ডলফিনের দেহ দেখা গিয়েছে। যদিও তাদের দেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন মেলেনি বলে তুরস্কের একটি গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন।
সামরিক কাজে অতীতেও ডলফিনের ব্যবহার করেছে রাশিয়া। ২০১৮ সালে সিরিয়ার যুদ্ধের সময় টারটাস নৌঘাঁটিতে ডলফিন বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছিল। উপগ্রহচিত্রে সেই ছবি ধরাও পড়েছিল। বস্তুত, ষাটের দশকে সোভিয়েত জমানাতেই এই বুদ্ধিমান প্রাণীগুলোকে সামরিক কাজের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু হয়েছিল। ক্রাইমিয়ার সেভাস্তিপোলেই ছিল সেই প্রশিক্ষণকেন্দ্র।
শত্রুপক্ষের ডুবুরিকে চিহ্নিত করা বা সমুদ্রের নীচে বিস্ফোরক চিহ্নিত করা এবং তা উদ্ধার করে নিয়ে আসার কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ডলফিনগুলোকে। এমনকি, সমুদ্র্রের তলায় বিস্ফোরক বসানোর জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তাদের।
২০১৪ পর্যন্ত ক্রাইমিয়া ছিল ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে। ফলে ডলফিন প্রশিক্ষণকেন্দ্রের কথা কিভের অজ্ঞাত নয়। গত সপ্তাহের গোড়া থেকে স্নেক আইল্যান্ডসহ কৃষ্ণসাগরের কয়েকটি রুশ নৌঘাঁটি দখলের জন্য অভিযান শুরু করেছে ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুগত বাহিনী। ঘটনাচক্রে তখন থেকেই বাড়তে শুরু করেছে ডলফিনের মৃত্যুর হার।