ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীদের রুমে গিয়ে বেপরোয়া ক্ষমতা দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। রুম দখল নিয়ে টেনে ছিঁড়ে ফেলা, গলায় পা দিয়ে ধরাসহ নানা হুমকির একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে অবশ্য তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।
অডিওতে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে না যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের হুমকি দিতে শোনা গেছে। যেখানে কলেজ অধ্যক্ষের চেয়েও নিজেকে ক্ষমতাধর বলে দাবি করেছেন তামান্না জেসমিন রিভা।
অডিও রেকর্ডে শোনা যায়, ‘তোরা লিগ্যাল তাতে আমার… (ভাষায় প্রকাশ যোগ্য না) গেছে। কোন হেডাম দেখাইতে আসিস তোরা। আমার পলিটিক্যাল রুমে তোরা লিগ্যাল থাকবি কি না, সেটা তোদের বিষয়। কে কে টাকা জমা দিছিস? আমারে দিছিস? আর কে লিগ্যাল?’
এসময় পাশ থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়- ও তো অসুস্থ বাসায় গেছে? এসময় ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘২০২ (রুম নং) এ আর কে লিগ্যাল? তোরা লিগ্যাল তাতে আমার কি… গেছে? বল? আমি কি … তোদের। এক পায়ে পাড়া দিমু আরেক পা টাইনা ধইরা ছিঁড়া ফেলমু। চার মাস হয়ে গেছে ফাজলামি শুরু করছিস।’
এ সময় সুমনা মীর নামে এক মেয়েকে গালমন্দ করতে শোনা যায় ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতিকে। তিনি বলেন, ‘বুঝিস না পলিটিক্যাল রুমে থাকিস। তোদের লিগ্যাল করাইছে তাতে আমার… কী? আমি যদি একটা সিট না দেই, ২০২ থেকে তোদের কোন বাপ সিট দেবে? ম্যাডামরা দেবে, ক্ষমতা আছে ম্যাডামদের। ম্যাডামদের ক্ষমতা আছে আমাদের রুম থেকে একটা মেয়েকে বের করার। ইডেন কলেজের প্রিন্সিপালেরও ক্ষমতা নেই এ রুম থেকে একটাকে বের করার। একদম গলায় পাড়া দিয়ে ধরতে ইচ্ছা করতেছে। আগামী এক ঘণ্টার মধ্যে যেই রুমে বলবো সেই রুমে যাবি। আমার সঙ্গে হ্যাডাম দেখাইতে আসে।’
ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘একটা সিঙ্গেল মেয়ে যদি ওই রুমে এসে কন্ট্রোল করতে চাস, সে হোক নেত্রী কিংবা ইডেন কলেজের প্রিন্সিপাল ম্যামও কোনো মেয়ে দিতে পারবে না। এটুকু সেন্স থাকা উচিত ছিল রুমটা যেহেতু ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্ট নিয়ে নিয়েছে, ইডেন কলেজের প্রেসিডেন্টের ওপরে আর কেউ নেই।’
এই বক্তব্য নিয়ে সমালোচনা শুরু হওয়ার পর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মীর সাথে তার আত্মার সম্পর্ক রয়েছে- এমন দাবি করে তামান্না জেসমিন রিভা শনিবার নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিটি কর্মির সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। এরা আমার পরিবারের সদস্য ছাড়া অন্য কিছু নয়। একান্ত ব্যক্তিগত পরিবেশে হলেও দায়িত্বশীল যায়গা থেকে অসংযত ভাষার প্রয়োগ আমার অপরাধ হয়েছে বলে আমি স্বীকার করছি। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আমাকে এমন শিক্ষা দেয় না তাই সংগঠনের প্রতি আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’