ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্ট সবার নিরাপত্তা ও সব ধরনের অনাকাঙ্খিত ঘটনা রোধে পাইলট প্রকল্পের অধীনে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি ক্লোসড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা লাগানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের অধীনে এসব ক্যামেরা লাগানো হচ্ছে বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর আগে বিশ্ব ব্যাংকের তত্ত্বাবধান ও ইউজিসির অর্থায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়ন প্রকল্প ‘হেকেপ’-এর অধীনে ঢাবির ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজি (আইআইটি) সিসি ক্যামেরার একটি প্রকল্প হাতে নেয়। ‘ই-প্রেজেন্স’ নামে প্রকল্পটির অধীনে ১১৩টি ক্যামেরা ছিল। ক্যাম্পাসের নীলক্ষেত মোড় থেকে শুরু করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে এই ক্যামেরাগুলো আছে। বছর দুয়েক আগে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
প্রকল্পটিতে ব্যবহৃত ক্যামেরাগুলো থাকলেও নেটওয়ার্ক ও নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ইস্যুতে সেগুলোর সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। সংযোগ বিচ্ছিন্ন এই ক্যামেরাগুলোতে নতুন করে সংযোগ দিয়ে মোট ১০০টি ক্যামেরার মধ্যে ৬০টি ক্যামেরা পুনরায় নীলক্ষেত মোড় থেকে রোকেয়া হল পর্যন্ত, টিএসসির আশেপাশে, টিএসসি থেকে রাসেল টাওয়ার হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার দিয়ে শক্তি ইন্সটিটিউট পর্যন্ত এলাকাগুলোর রাস্তায় লাগানো হবে।
এছাড়াও রেজিস্ট্রার বিল্ডিংয়ের চারদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবের আশপাশে ও শহীদুল্লাহ্ হলে বাকি ৪০টি ক্যামেরা লাগানো হবে। গত ২৯ জুন এই প্রকল্পের জন্য দরপত্র আহ্বানও করা হয়েছে।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে মোবাইল, মানিব্যাগ ও সাইকেল চুরি বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। সাধারণত গণরুম, পলিটিক্যাল রুমে এসব জায়গায় চুরি হচ্ছে। এর অধিকাংশই ঘটছে সিসি ক্যামেরার অপ্রতুলতার কারণে।
নতুন করে ১০০টি ক্যামেরা লাগানো হলে চুরিসহ সব ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কমে আসবে বলে মনে করেন আইসিটি সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসিফ হোসেন খান। তিনি বলেন, আগেই সিসিটিভির কাজ করার কথা থাকলেও করোনার জন্য দুই বছর পিছিয়ে পড়েছি। ১০০টি নতুন সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো হবে নীলক্ষেত থেকে টিএসসি, টিএসসি থেকে শহীদ মিনার হয়ে শক্তি ইনস্টিটিউট পর্যন্ত।
তিনি আরও বলেন, এই ক্যামেরাগুলো ‘পাইলট প্রকল্প’ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছি। এটা সাকসেসফুল হলে বাকি রাস্তাগুলোতেও ক্যামেরা লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু করব। মেট্রো রেলের কাজ শেষ হলে চারুকলা, বাংলা একাডেমির দিকে সিসি ক্যামেরা লাগানো শুরু হবে। ইতোমধ্যে এটির জন্য দরপত্র আহ্বান শুরু হয়ে গেছে। টেন্ডারের কাজ শেষ হলেই মূল কাজে আমরা চলে যাব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম গোলাম রব্বানী গণমাধ্যমকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল থেকে সিসি ক্যামেরাগুলো নিয়ন্ত্রিত। কোনো ঘটনায় ডকুমেন্টস প্রয়োজন হলে বা আইনশৃঙ্খলার কাজে প্রয়োজন হলে আমরা তাদের সহযোগিতা নেই। তারা একটি নতুন প্রজেক্ট হাতে নিয়েছে। আশা করি এটা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।