না ফেরা দেশে চলে গেলেন বাংলা গানের কিংবদন্তী শিল্পী বশির আহমেদ। শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে নিজ বাসায় মারা যান তিনি।
বশির আহমেদের ছেলে রাজা বশির সাংবাদিকদের বলেন, তার বাবা দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসার ও হূদেরাগে ভুগছিলেন। কয়েক দিন ধরে তার স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি ঘটে।
রোববার সকাল ১০টায় মোহাম্মদপুরের জহুরী মহল্লা জামে মসজিদে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
দূর আকাশ হতে খসে পড়া তারা যেমনি, পৃথিবীতে আমি যেন তেমনি...নিজের গাওয়া এই গানের মতোই চলে গেলেন বাংলা সংগীতজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র শিল্পী ।
ফিরে দেখা তার জীবনের কিছু কথা:
দিল্লির সওদাগর পরিবারের সন্তান বশির আহমেদ ১৯৩৯ সালের ১৯ নভেম্বর কলকাতার খিদিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নাসির আহমেদ। ষাটের দশকের শুরুতে তিনি সপরিবারে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় আসার আগেই উর্দু চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেন তিনি। ওই সময়ই শিল্পী হিসেবে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তার কণ্ঠ ছিল মাধুর্যে ভরা। রাগসংগীতেও দখল ছিল তার। ওস্তাদ বড়ে গোলাম আলী খাঁর কাছে তালিম নেন তিনি। তালাশ চলচ্চিত্রে বিখ্যাত শিল্পী তালাত মাহমুদের সঙ্গে কাজ করেন। রেডিও পাকিস্তানেও গান গেয়েছেন তিনি।
বশির আহমেদ ছিলেন একাধারে সংগীতশিল্পী, সুরকার, গীতিকার ও সংগীত পরিচালক। একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন গুণী এই শিল্পী। তার জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে: ‘অনেক সাধের ময়না আমার’, ‘আমাকে পোড়াতে যদি এত লাগে ভালো’, ‘আমি সাত সাগর পাড়ি দিয়ে’, ‘যারে যাবি যদি যা/ পিঞ্জর খুলে দিয়েছি’, ‘ডেকো না আমাকে তুমি/ কাছে ডেকো না’।
বশির আহমেদের স্ত্রী মীনা বশির, ছেলে রাজা বশির ও মেয়ে হুমায়রা বশির সংগীতের সঙ্গে যুক্ত।
বশির আহমেদের মৃত্যুতে সংগীত ও চলচ্চিত্রজগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শিল্পীদের অনেকেই তাঁর বাসায় যান। বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ বশির আহমেদের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে।