গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে শিপন কাজী ওরফে জুনুন হত্যা মামলায় পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম সাজেদুর রহমান এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ড পাওয়া পাঁচজন হলেন- লেলিন শিকদার, মনির হোসেন, স্বপন মোল্লা ওরফে ডালিম, ওবায়দুল শেখ ওরফে ইবাদুল শেখ ও তপন কাজী ওরফে বাঘা। এরা সবাই একই গ্রামের বাসিন্দা। এদের মধ্যে মনির ও স্বপন মোল্লা পলাতক।
এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার বাকি ছয় আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায়ে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে খুন ও লাশ গুমের অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে তাদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হলো। অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হলো।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আইনজীবী মাহবুবুর রহমান। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী গোলাম মোস্তফা খান।
মাহবুবুর রহমান জানান, ২০০৬ সালের ৩০ জুলাই রাতে আসামিরা মুকসুদপুর উপজেলার নওখণ্ডা গ্রামের শিপন কাজী ওরফে জুনুনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারক।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, শিপন কাজী মুকসুদপুরের মামার বাড়িতে থেকে পড়ালেখা করতেন। পল্লী উন্নয়ন সমিতির ব্যবসা করে পড়ালেখার খরচ চালানোর পাশাপাশি মায়ের কাছেও টাকা পাঠাতেন শিপন।
মনির, ওয়ায়দুল ও ডালিমকে ওই সমিতির ব্যবসার টাকা দিয়েছিলেন শিপন। কিন্তু তারা টাকা পরিশোধ না করে অন্যদের নিয়ে শিপনকে হত্যা করে। পরে লাশ স্থানীয় উজানি খালে ডুবিয়ে দেয়। পরদিন মুকসুদপুরের উজানি খালে হাত পা বাঁধা অবস্থায় শিপনের লাশটি ভেসে ওঠে।
শিপনের মা মরিয়ম বেগম ওইদিনই মুকসুদপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান জানান, ২০০৭ সালের ১৭ জুলাই ১১জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে ডিবি পুলিশ। এরপর ২০১০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ১১ জনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় চার্জ গঠন করেন আদালত। মামলাটি গত বছর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য স্থানান্তর করা হয়।
তিনি জানান, এ মামলায় ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ১৪ জন সাক্ষ্য দেন।