দেশের সব অফিস-আদালতসহ সর্বত্র আগামী ১৫ মের মধ্যে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছে।
এর আগে বাংলা ভাষা প্রচলনে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ বাস্তবায়নে সরকারের অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে বিবাদীদের দাখিল করা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালত জানায়, আদেশের সম্মতি পূরণ দেখে মনে হয় প্রতিপক্ষ একে অপরকে চিঠি প্রেরণ ছাড়া বাংলা ভাষা প্রচলন বিষয়ে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করে নাই। আদালত আরো জানায়, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বাংলা ভাষা প্রচলনের বিষয়ে কোনো আগ্রহ নেই।
একমাসের ওই সময়সীমার মধ্যে আদেশ বাস্তবায়ন না করায় রিটকারী আইনজীবী গত ৬ এপ্রিল বিবাদী ছয় সচিবের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ করেন। এরপর মঙ্গলবার বিষয়টি পরবর্তী শুনানির জন্য আসে। শুনানির পর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ রায় সাংবাদিকদের বলেন, আমরা তথ্য সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দেয়া দুটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছি। আদালত প্রতিবেদন দেখে সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি একই বেঞ্চ সর্বত্র বাংলা ভাষা প্রচলনের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এছাড়া, একমাসের মধ্যে সকল বিদেশি ভাষার বিজ্ঞাপন এবং গাড়ির নেমপ্লেট বাংলায় পরিবর্তনের জন্য কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী আকন্দ এ রিট দায়ের করেন। এর আগে গত ১৭ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের এ বেঞ্চ এক আদেশে দেশের সব সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, ব্যানার, গাড়ির নম্বর প্লেট, সব সরকারি দপ্তরের নামফলক এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে ইংরেজি বিজ্ঞাপন ও মিশ্র ভাষার ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। দূতাবাস, বিদেশি সংস্থা ও তৎসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রকে এ আদেশের আওতার বাইরে রাখা হয়। ১ মাসের মধ্যে এ আদেশ বাস্তবায়ন করে আদালতকে অবহিত করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশনা অনুসারে মন্ত্রিপরিষদসচিব ও তথ্যসচিবের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দাখিল করেন রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিত রায়। এ প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আদালত ওই আদেশ দেন বলে জানান বিশ্বজিত রায়।