মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামাত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর আপিল শুনানি শেষ, রায় যেকোনো দিন। বুধবার প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হলেন- বিচারপতি এসকে সিনহা, বিচারপতি আব্দুল ওয়াহহাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী।
আদালত বিচারিক আদালতে দায়ের হওয়া পিরোজপুরের ইব্রাহিম কুট্টি হত্যা মামলার নথি তলব বা তদন্তের বিষয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদন ২টি খারিজ করে দেয়।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামাতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন দণ্ড দিয়েছিল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ওই দণ্ডের বিরুদ্ধে আবদুল কাদের মোল্লা ও রাষ্ট্রপক্ষ সুপ্রিম কোর্টে পৃথক আপিল দায়ের করেন।
গত বছরের ১ আগস্ট ওই আপিলের শুনানি শেষ হয় তবে সংক্ষিপ্ত রায় দেয়া হয় ১৭ সেপ্টেম্বর। আর পূর্ণাঙ্গ রায় ৫ ডিসেম্বরে প্রকাশ করা হয়।
এদিকে, পূর্ণাঙ্গ রায় না পাওয়া পর্যন্ত কাদের মোল্লা রিভিউ পিটিশন দায়ের করতে পারেননি। এরপর রিভিউ পিটিশনের শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ১২ ডিসেম্বর তা খারিজ করে দেন। ওই দিনই সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় এ পর্যায়ে সাঈদীর রায় ঘোষণার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারণ করতে পারেন আপিল বিভাগ।
উল্লেখ্য, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে জামাতের এ শীর্ষ নেতা আপিল দায়ের করেন। এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর আপিল আবেদনের শুনানি শুরু হয়। শুনানির ২৫তম দিনে গত ২৯ জানুয়ারি আবেদনের উপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়।
বিদেশে অবস্থান করায় আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাকের অনুপস্থিতিতে অ্যাডভোকেট এসএম শাহজাহান যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। আসামিপক্ষের পর রাষ্ট্রপক্ষ গত ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করে।
রাষ্ট্রপক্ষের আনীত ২০টি অভিযোগের মধ্যে ৮টি অভিযোগের ওপর আসামিপক্ষ যুক্তি পেশ করে। আর ট্রাইব্যুনাল যে ১২টি অভিযোগ থেকে সাঈদীকে খালাস দিয়ে ছিল, সেগুলোতেও আপিলে রাষ্ট্রপক্ষ ‘পূর্ণ ন্যায়বিচার’ চায়।