রাজধানীর কলাবাগান তেঁতুলতলার মাঠ নিয়ে পুলিশের উপর ঘৃণা বাড়ছে শিশুদের। কেননা এতো কিছুর পরও মাঠে থানা নির্মাণের কাজ করে যাচ্ছে পুলিশ। এ নিয়ে এলাকার শিশু ও অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক হতাশা দেখা দিয়েছে। বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, মাঠে চেয়ার পেতে বসে আছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। এঁদের পাহারায় নির্মাণশ্রমিকেরা মাঠে দেয়াল নির্মাণ করছেন। এ সময় আশপাশে থাকা কয়েকজন এলাকাবাসীকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে অনেক শিশুই এই দৃশ্য দেখছে। তাদের চোখে-মুখে হতাশার ছাপ। পুলিশকে তারা ঘৃণা করতে শিখছে। বারো বছরের মেয়েকে নিয়ে নির্মাণকাজ দেখছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা জাহানারা সরকার। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এত কিছুর পরেও বাচ্চাদের খেলার মাঠেই থানা বানাতে হচ্ছে পুলিশের। পুরো এলাকার একমাত্র খেলার মাঠটাই তারা দখল করছে। আশপাশে কত জায়গা বেদখল হয়ে আছে। পুলিশ চাইলে তো সেগুলো খুঁজে সেখানে থানা করতে পারে।’
নির্মাণকাজের তদারকিতে মাঠে থাকা এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘এখানে আমরা যারা আছি, আমাদের দায়িত্ব পালন করছি। এ সময় তিনি ওপরের নির্দেশের কথা জানিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।
মাঠটি রক্ষার আন্দোলনে এলাকার শিশুদের পাশে এসে দাড়িয়েছেন দেশের পরিবেশবাদী ও অধিকারকর্মীরা। এই মাঠ তেঁতুলতলাবাসীর আন্দোলন দীর্ঘদিনের। গত রোববার মাঠ রক্ষা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় সমাজকর্মী সৈয়দা রত্না ও তাঁর ছেলে মোহাম্মদ ঈসা আব্দুল্লাহকে আটক করে পুলিশ। পরদিন, অর্থাৎ গত সোমবার মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। এ নিয়ে পরিবেশবাদী ও নাগরিক সংগঠনসমূহ আপত্তি তুলে মাঠে নেমেছে।
মাঠের বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে চাননি কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র।
এদিকে খেলার মাঠে থানা নির্মাণের প্রতিবাদে বুধবার দুপুরে মাঠ রক্ষায় আন্দোলনকারী বিভিন্ন সংগঠন ও নাগরিকবৃন্দের যৌথ উদ্যোগে মাঠের সীমানায় বৃক্ষরোপণ ও সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে।
এর আগে এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে গতকাল মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সব ধরনের নিয়ম মেনেই ধানমন্ডি মৌজার শূন্য দশমিক ২০ একর (২০ শতাংশ) ওই জমি থানার জন্য অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জনস্বার্থে সরকার ডিএমপির কলাবাগান থানা ভবন নির্মাণের জন্য দেশের প্রচলিত সব আইন কানুন মেনে ওই জায়গা বরাদ্দ দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে ডিএমপি কোনো ব্যক্তির বা সংস্থার জমিতে বেআইনিভাবে থানা ভবন নির্মাণ করছে না।