বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থা ঝুকিঁপূর্ণ নয় বলে জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক।
মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টের তথ্য তুলে ধরে সাংবাদিকদের তিনি জানান, নতুন করে অসুস্থ হননি।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেই তার চিকিৎসার জন্য কারাকর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়-বিএসএমএমইউ'র ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল জলিল চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা শনিবার বিকাল পৌণে ৪টার দিকে কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।
ঢাকা সেন্ট্রাল জেলের সহকারি সার্জন ডা. মাহমুদুল হাসান জানান রোববার মেডিকেল বোর্ডের রির্পোট অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোববার দুপুরে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলের পরিচালক খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট সম্পর্কে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন-নতুন করে তিনি অসুস্থ হননি— তার শারিরীক অবস্থাও ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
পুরনো যে সমস্যাগুলো খালেদা জিয়ার আছে তাতে বঙ্গবন্ধু মেডিকেলেই তার চিকিৎসা সম্ভব বলে জানিয়ে তিনি বলেন- সেজন্য বিশেষায়িত কোনো হাসপাতালের প্রয়োজন আপাতত নেই।
বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গতকালের তথ্য:
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখে এসেছেন চিকিৎসকরা।
তার চিকিৎসায় গঠিত পাঁচ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা পুরান ঢাকায় নাজিমউদ্দিন রোডের পুরানো কেন্দ্রীয় কারাগারে যান।
চিকিৎসকেরা বিকেল পৌনে ৪টায় কারাগারে প্রবেশ করেন। প্রায় ১ ঘণ্টা ৫ মিনিট পর সেখান থেকে বের হয়ে আসেন। তবে খালেদার চিকিৎসার বিষয়ে তারা গণমাধ্যমের সামনে কোনো মন্তব্য করেননি।
পরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা প্রায় ২০ মিনিট ধরে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। কাল- রোববার চিকিৎসকেরা কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার জন্য ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) দেবেন।
শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে চিকিৎসকদের দলটি কারাগারে যান।
এরআগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পরিচালক আব্দুল্লাহ আল হারুন এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, কারা কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পাঁচ চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডটি গঠন করা হয়েছে।
পাঁচ সদস্য মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা হলেন- বিএসএমএমইউ’র মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এম এ জলিল, কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. হারিসুল হক, অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক ডা. আবু জাফর বিরু, চক্ষু বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারিক রেজা আলী ও ফিজিক্যাল মেডিসিন সহযোগী অধ্যাপক ডা. বদরুন্নেসা।
এদিকে এই মেডিকেল বোর্ডে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত কোনো চিকিৎসক না রাখায় এর সমালোচনা করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ নয়াপলটনে আজ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন রিজভী
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সুযোগ না দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের ডাক্তারদের দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন দূরভিসন্ধিমূলক। গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তির চিকিৎসা নিয়ে এটি এক চরম তামাশা।’
গত ৯ সেপ্টেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে দেখা করে খালেদা জিয়ার পছন্দ অনুযায়ী রাজধানীর কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর অনুরোধ জানায়। এরপরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড হবে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয় আদালত। এরপর থেকেই পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন তিনি।